ঢাকা | বুধবার
১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আসন সংখ্যা কমায় ক্ষুব্ধ যাত্রীরা

  • আন্তঃনগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেন

জামালপুর থেকে দেওয়ানগঞ্জ বাজার স্টেশন পর্যন্ত রেলপথে চলাচলকারি আন্তঃনগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনটির ৬০টি আসন কমিয়ে দেয়ায় স্থানীয় যাত্রীদের মাঝে হতাশা ও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় যাত্রীরা অবিলম্বে রেল কর্তৃপক্ষের এমন হটকারী সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন এ অঞ্চলের শতশত ট্রেন যাত্রী। অন্যথায় স্থানীয় যাত্রীরা বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিবেন বলেও হুঁশিয়ারী করে দিয়েছেন তারা।

স্থানীয়রা জানায়, জামালপুর থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলাচলের জন্য এ অঞ্চলের জনগন ট্রেন ভ্রমনকে সবচেয়ে বেশী আরামদায়ক, স্বাচ্ছ্যন্দ ও নিরাপদ মনে করে থাকেন। আর তাইতো সড়ক পথের পরিবর্তে প্রতিদিন শত শত যাত্রী ট্রেনযোগে জামালপুর রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলাচল করে থাকে। ট্রেন যাত্রীদের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও  রেল কর্তৃপক্ষ গত ১৯ মে জামালপুর থেকে ঢাকার জন্য নির্ধারিত ‘ঠ’ বগির ৬০টি আসনই বাতিল করেছেন। রেল কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে হতবাক হয়ে গেছেন এ অঞ্চলের যাত্রীরা। জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী গোলাম মোর্তজা বলেন পূর্বে জামালপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য আন্তঃনগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনে ১২০টি আসন বরাদ্দ থাকলেও গত ১৯ মে থেকে তা কমিয়ে ৬০টি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০টি টিকেট কাউন্টারে আর বাকী ৩০টি টিকেট অন-লাইনে বিক্রি হচ্ছে।

জামালপুরের মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, যাত্রী চাপকে মাথায় রেখে বিভিন্ন সংগঠন ঢাকা-জামলাপুর রুটে নতুন ট্রেন সংযোজন ও ট্রেনের আসন বৃদ্ধির জন্য মাঝে মধ্যেই আন্দোলন করে আসছেন। অথচ তাদের এই আন্দোলনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ আসন বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তিনি বলেন, আন্তঃ নগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি টিকেটের জন্য প্রতিদিন যাত্রীরা যেখানে রীতিমত যুদ্ধ করে থাকেন সেখানে এতোগুলো টিকেট কোন যুক্তিতে রেল কর্তৃপক্ষ বাতিল করলো তা আমার বোধগম নয়।

জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এম. এ. জলিল বলেন, জামালপুর জেলা সদর থেকে প্রতিদিন শত শত যাত্রী  আন্তঃ নগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনযোগে ঢাকা যাতায়াত করে থাকেন। বিপুল পরিমান যাত্রী চাপ সামাল দিতে যেখানে এ ট্রেনে আসন বৃদ্ধি করা একান্তই জরুরী,  সেখানে উল্টো ট্রেনের আসন সংখ্যা কমিয়ে দিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ চরম উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছেন । তিনি রেল কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত দ্রুত বাতিলের দাবি জানান।

জামালপুর রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মো.আছাদ-উজ জামান বলেন, জামালপুর-ঢাকা রুটে আন্তঃ নগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী চাপ সবচেয়ে বেশী। যাত্রার নির্ধারিত তারিখের পাঁচ দিন পূর্বে এই ট্রেনের অগ্রীম টিকেট কাটার জন্য প্রতিদিন সকালে কাউন্টারে যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড় দেখা যায়। ভীড় সামাল দিতে আমাদেরকে তখন রীতিমত হিমসিম খেতে হয়। হঠাৎ করেই এ ট্রেনের আসন সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসায় দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও যাত্রীরা টিকেট  না পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন।

জামালপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.গোলজার হোসেন বলেন, প্রতিদিন সকালে আন্তঃ নগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের অগ্রীম টিকেট কাটার জন্য প্রচুর যাত্রী টিকেট কাউন্টারের সামনে ভীড় করে। জামালপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য আন্তঃ নগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেটের চাহিদা খুব বেশী।

সংবাদটি শেয়ার করুন