- লেনদেনের সেরা বেক্সিমকো
- গেইনারের সেরা এসইএমএল ফান্ড
- লুজারে সোনালী পেপার,
- পিই রেশিও ১৪.২৯ পয়েন্ট
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার) লেনদেন পরিমাণ আগের সপ্তাহ তুলনায় কমেছে। গেল সপ্তাহে পুঁজিবাজারের ক্রেতার সংকটে ছিল। কিন্তু শেয়ার বিক্রেতায় পড়ে হিড়িক। এসময় পতন সব ধরনের সূচকের। কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
মন্দা পুঁজিবাজারেও সপ্তাহটিতে ভালো কোম্পানি (‘এ’ ক্যাটাগরি) শেয়ার দর টপটেন লেনদেনে কদর ছিল বেশি। সপ্তাহটিতে ‘এ’ ক্যাটাগরির ৮০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার টপটেন লেনদেনে অবস্থান করেছে। টপটেন লেনদেনে ওঠে আসা ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলো হলো- বেক্মিমকো, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, সাউর্থ ইস্ট ব্যাংক, ফরচুন সুজ, জিএসপি ফাইন্যান্স, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং এসিআই ফরমুলেশন। অপরদিকে টপটেন লেনদেনে ওঠে আসা অন্যদুটি কোম্পানি হলো- জেএমআই হসপিটাল (‘এন’ক্যাটাগরি) এবং শাইনপুকুর সিরামিকস (‘বি’ক্যাটাগরি)।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে বেক্মিমকো শেয়ার দর টপটেন লেনদেনের শীর্ষে ওঠে এসেছে। সপ্তাহটিতে কোম্পানিটি ২৩০ কোটি ৫১ লাখ ৩৯ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। আর শেয়ার লেনদেন ১ কোটি ৭৬ লাখ ৫৮ হাজার ৭৮৪টি। গত বৃহস্পতিবার বেক্মিকোর শেয়ার প্রতি দর দাঁড়ায় ১৩৪ টাকায়। এর আগে ১৯ মে শেয়ার প্রতি দর ছিল ১৩২ দশমিক ১০ টাকা। এই সময়ের ব্যবধানে কোম্পানির শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ১ দশমিক ৯০ টাকা।
ডিএসইর লেনদেনে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে আইপিডিসি ফাইন্যান্স ১৩৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা, জেএমআই হসপিটাল ১১০ কোটি ৯২ লাখ টাকা, শাইনপুকুর সিরামিকস ১০০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ৯০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, সাউর্থইস্ট ব্যাংক ৭৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা, ফরচুন সুজ ৭৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকা, জিএসপি ফাইন্যান্স ৭০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ৬৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং এসিআই ফরমুলেশন ৫৪ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
‘পুঁজিবাজারের ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ার ‘বি’ ও ‘জেড’ ক্যাটাগরির থেকে তুলনামূলক ভালো কোম্পানি। নিয়ম অনুসারে, যেসব কোম্পানি বছর শেষে তাদের শেয়ারহোল্ডারদের সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে তার ঊর্ধ্বে লভ্যাংশ (নগদ বা বোনাস) দেয় তারাই ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার। যেসব কোম্পানি বছর শেষে তাদের শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নিচে থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ লভ্যাংশ (নগদ বা বোনাস) দেয় তারা ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার।
যেসব কোম্পানি বছর শেষে তাদের শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নিচে থেকে শুরু জিরো লভ্যাংশ (নগদ বা বোনাস) দেয় তারাই ‘জেড’ ক্যাটাগরি কোম্পানির শেয়ার। এছাড়া এন ক্যাটাগরি নতুন কোম্পানির শেয়ার। যেগুলোর পুঁজিবাজারের লেনদেন শুরু হয়েছে কিন্তু বছর পার হয়নি, সেইগুলো ‘এন’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে।
অপরদিকে, সপ্তাহটিতে ভাল ক্যাটাগরির (‘এ’ ক্যাটাগরি) কোম্পানির শেয়ার টপটেন গেইনারে কদর ছিল বেশি। গেইনারে ৭০ শতাংশ ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ারের অবস্থান করেছে। বাকি ৩০ শতাংশ ‘বি’ ক্যাটাগরি কোম্পানির শেয়ারের অবস্থান করেছে। গেল সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড শেয়ার দর টপটেন গেইনারের শীর্ষে ওঠে এসেছে।
সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ফান্ডটি একাই ২ কোটি ৪৬ লাখ ২৬ হাজার টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। টপটেন গেইনারে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে লুব-লেফ (‘এ’ ক্যাটাগরি) ১৩ দশমিক ৫২ শতাংশ, জিএসপি ফাইন্যান্স (‘এ’ ক্যাটাগরি) ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল (‘এ’ ক্যাটাগরি) ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ, রেইনউক যজ্ঞেশ্বর (‘এ’ ক্যাটাগরি) ১২ দমিক ২৪ শতাংশ, ভিএফএস থ্রেড (‘এ’ ক্যাটাগরি) ১১ দশমিক ৪২ শতাংশ, কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজ (‘এ’ ক্যাটাগরি) ৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ, ন্যাশনাল ফিড (‘বি’ ক্যাটাগরি) ৮ দশমিক ২৮ শতাংশ, সিলভা ফার্মা (‘বি’ ক্যাটাগরি) ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং মাইডাস ফাইন্যান্স (‘বি’ ক্যাটাগরি) ৬ দমমিক ২৫ শতাংশ করে শেয়ার দর বেড়েছে।
এছাড়া সপ্তাহটিতে ভালো ক্যাটাগরির (‘এ’ ক্যাটাগরি) কোম্পানির শেয়ার টপটেন লুজারে কদর ছিল বেশি। লুজারে ৭০ শতাংশ ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ারের অবস্থান করেছে। বাকি ৩০ শতাংশ ‘বি’ ক্যাটাগরি কোম্পানির শেয়ারের অবস্থান করেছে। গেল সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির সোনালী পেপারের শেয়ার দর টপটেন লুজারের শীর্ষে ওঠে এসেছে। সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ২৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ। সোনালী পেপার একাই ২৩ কোটি ৩৬ লাখ ২ হাজার টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
টপটেন লুজারে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বঙ্গজ (‘বি’ ক্যাটাগরি) ১৫ দশমিক ২০ শতাংশ, রংপুর ডেইরি (‘বি’ ক্যাটাগরি) ১৫ শতাংশ, পাইওনিয়র ইন্স্যুরেন্স (‘এ’ ক্যাটাগরি) ১৩ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স (‘এ’ ক্যাটাগরি) ১২ দশমিক ৩৮ শতাংশ, আরামিট (‘বি’ ক্যাটাগরি) ১১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, ফাস্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক (‘এ’ ক্যাটাগরি) ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ, আমান ফিড (‘এ’ ক্যাটাগরি) ১০ দশমিক ৪২ শতাংশ, এনআরবি কর্মাশিয়াল ব্যাংক (‘এ’ ক্যাটাগরি) ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং ঢাকা ইন্স্যুরেন্স (‘এ’ ক্যাটাগরি) ১০ দশমিক ২১ শতাংশ করে শেয়ার দর কমেছে।
গত সপ্তাহের শেষে ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করে ১৪ দশমিক ২৯ পয়েন্টে। যা আগের সপ্তাহের শেষে ছিল ১৪ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও কমেছে দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৩ শতাংশ। পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানির মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১৫ পয়েন্ট ছাড়ালেই তা বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
অন্যদিকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসেবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। এ হিসেবে ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। সেই হিসেবে গত বৃহস্পতিবার ডিএসইর পিই দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ২৯ পয়েন্টে। মানে পিই রেশিও হিসাবে বিনিয়োগ নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে।
আনন্দবাজার/শহক