পরিবেশের ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়াই চলছে গুরুদাসপুর উপজেলার শাহাপুর গ্রামের পাঁচটি ইটভাটা। এসব ইটভাটার প্রতিটিই নির্মাণ করা হয়েছে ঘনবসতি এলাকা এবং ফসলি জমিতে। যতই দিন গড়াচ্ছে ধোঁয়া দখল করে নিচ্ছে এলাকার বাতাস। অস্বস্তিকর হয়ে উঠছে স্থানীয় জনজীবন।
গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউপিতে শাহাপুর গ্রামে হাকিম ব্রিক্সস (এইসআরবি), এএসবি ব্রিক্সস, এআরবি ব্রিক্সস, এইচকেবি ব্রিক্সস ও এইসবিবি ব্রিক্সস নামের এসব ইটভাটা যত্রতত্রভাবে ফসলি জমি ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় গড়ে উঠেছে। অথচ ১৯৯২ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপন ও ২০০১ সালের (সংশোধিত) ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী আবাদি জমি ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন ধরে ইটভাটা চালানো হচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পাঁচটি ইটভাটারই চিমনির উচ্চতা ৪০ ফিটের মতো। চিমনির উচ্চতা কম হওয়ায় ভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। শ্বাষকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এসব এলাকার মানুষ। শুধু মানুষেরই ক্ষতির হচ্ছেনা পাশাপাশি ভাটার আশপাশের জমিগুলোতেও মারাত্মক ফসলহানি হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চলা এসব ইটভাটার মালিকরা অনুমোদনের কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি।
মশিন্দা ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ ইউপিতে অনুমোদনহীন চারটি ইটভাটায় কাজ চলছে। এসব ইটভাটার মাটি, ইট, কয়লা বহনকারী ওভারলোডেড ট্রাক চলাচল করায় গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
উপজেলার শাহপুর গ্রামের বাসিন্দা বাবু সরকার, রফিক মাস্টার ও সবুজ জানান, পাঁচটি ইটভাটার মধ্যে চারটিই ৫০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে। ভাটাগুলোর চিমনির উচ্চতা কম হওয়ায় নির্গত কালো ধোঁয়া বাতাসে ছড়িয়ে পরিবেশ বিষাক্ত করে তুলছে।
এএসবি ব্রিক্সের মালিক আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তবে অনুমোদন এখনো পাওয়া যায়নি।
এইচবিবি ব্রিক্সের ম্যানেজার আফজাল বলেন, অনুমোদন না থাকলেও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই ইটভাটা চালানো হচ্ছে।
গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, ইটভাটা দেখার বিষয়টি থানার নয়।
গুরুদাসপুরের ইউএনও মো. তমাল হোসেন বলেন, অনুমোদনহীন ইটভাটা চালানোর কোনো সুযোগ নেই। এসব ইটভাটা বন্ধে অভিযান চলছে।
আনন্দবাজার/ইউএসএস