জব্দ ১০ লাখ লিটার
সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকটে নাকাল জনজীবন। দেশের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না সয়াবিন তেল। কোথাও পাওয়া গেলেও তেলের সঙ্গে ক্রেতাদের কিনতে হয়েছে বাড়তি পণ্য। ব্যাবসায়ীরা বলছেন, তেলের সরবরাহ নেই। বিশ্ববাজারে তেলের সঙ্কট দেখিয়ে দায় সেরেছেন তারা। এমন সংকটে অভিযোগ উঠেছিলো একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ‘অবৈধভাবে’ তেল মজুত করে তৈরি করেছে কৃত্রিম সঙ্কট।
সুযোগ বুঝে বাড়তি দামে সেগুলো বিক্রি করছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে দোকান ও গুদাম থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে মজুত করা তেল। সারাদেশে গত শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত জব্দ করা হয়েছে অবৈধভাবে মজুত করা ১০ লাখ ৪১ হাজার ৪২২ লিটার ভোজ্যতেল।
রাজশাহীতে অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয়েছে মোট ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩৯ লিটার তেল। এসময় অবৈধভাবে মজুতের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয় ৭ জনকে। জরিমানা করা হয় ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা। পাবনায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ১ লাখ ২৪ হাজার ১৩৭ লিটার তেল। সিরাজগঞ্জে জব্দ হয়েছে ৪১ হাজার লিটার। এসময় ৬ ব্যবসায়ীকে সাজা দেয়া হয়। বগুড়ায় অভিযানে পাওয়া যায় ৪৩ হাজার ৫৯২ লিটার তেল। নাটোরের বড়াইগ্রাম, সদর উপজেলার নিচাবাজার ও স্টেশন বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয় ৫ হাজার ৩৫৯ লিটার সয়াবিন তেল। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বটতলা হাট এলাকার মেসার্স কাজল স্টোর নামে একটি দোকানের গুদামে পাওয়া যায় ৪ হাজার ৫০০ লিটার। এসময় দোকানমালিক আবু বাক্কার আলী কাজলকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
খুলনার চার প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া যায় ২ লাখ ৬২ হাজার ৬২০ লিটার খোলা তেল। বাগেরহাটে দুটি অভিযানে জব্দ করা হয় ৫ হাজার ৪১০ লিটার তেল। এসময় ৩ ব্যবসায়ীকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বৃহস্পতিবার এক ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে ৪২ হাজার ২৪ লিটার তেল জব্দ করে প্রশাসন। যশোরে মঙ্গল ও বুধবার ৭ হাজার ৪১৮ লিটার তেল মজুদ করার দায়ে দুই ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। গত ১১ মে সাতক্ষীরার পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার সাকার মোড়ের শারমিন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ও সুলতানপুর বড়বাজারে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ৯৭৪ লিটার সয়াবিন তেল।
ঠাকুরগাঁও থেকে উদ্ধার করা হয় ৭৯ হাজার ২৫০ লিটার। রংপুর থেকে ৬৭ হাজার ৩৬২ লিটার, নীলফামারী থেকে ৭ হাজার লিটার এবং দিনাজপুর থেকে ৪ হাজার লিটার। এছাড়া গাইবান্ধা থেকে ৭০০ লিটার, পঞ্চগড়ে ৩২০ লিটার, কুড়িগ্রামে জব্দ করা হয়েছে ৮৮ লিটার সয়াবিন তেল। গাজীপুরে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার মিলিয়ে ২৫ হাজার ৩১৬ লিটার, শরীয়তপুর থেকে ১৫ হাজার ৭০০ লিটার, মানিকগঞ্জে উদ্ধার হয়েছে ১১ হাজার লিটার, নারায়ণগঞ্জে ১ হাজার ২৬০ লিটার, নরসিংদীতে ১ হাজার ২৪ লিটার, ফরিদপুরে ৭১২ লিটার এবং কিশোরগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয় ২০০ লিটার।
চট্টগ্রাম থেকে ২৩ হাজার ২২৫ লিটার, কুমিল্লায় ১৭ হাজার ৩৬৪ লিটার, লক্ষ্মীপুরে ৬ হাজার লিটার, খাগড়াছড়িতে ৩ হাজার ৭০০ লিটার, ফেনীতে ৯২৮ লিটার, কক্সবাজারে ২৪০ লিটার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৪০ লিটার এবং নোয়াখালীতে ২০০ লিটার তেল জব্দ করা হয়েছে। ময়মনসিংহে ২০ হাজার লিটার, নেত্রকোণা দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের গুদাম থেকে ৭৩২ লিটার বোতলজাত তেল জব্দ করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। একইদিন বিকেলে কলমাকান্দা উপজেলার ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম মোস্তফার গুদাম থেকে ৩ হাজার ৭০০ লিটার তেল জব্দ করা হয়। শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বিক্রি না করে লুকিয়ে রাখা ৫ হাজার লিটার তেল জব্দ করা হয়। জেলার গাজীর খামার বাজারে সাথী স্টোর নামে একটি খুচরা বিক্রেতার দুইটি গুদাম ও বাসায় পাওয়া যায় আরও ৫ হাজার লিটার তেল। জামালপুরের দুইটি দোকান থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে জব্দ করা হয় ৪ হাজার ৩৩০ লিটার সয়াবিন তেল।
ঝালকাঠি থেকে ১৪ হাজার ৪৪৬ লিটার তেল উদ্ধার করা হয়। বরিশাল থেকে ২ হাজার ১৯৪ লিটার, বরগুনা ৩ হাজার লিটার, পিরোজপুরে ১০ হাজার ৪০৪ লিটার উদ্ধার করা হয়। গত বুধবার থেকে ২ দিনে বিভাগের ৪ জেলা থেকে ২৩ হাজার ৬৯৯ লিটার তেল জব্দ করা হয়েছে। সিলেট জেলা থেকে জব্দ করা হয় ৪ হাজার ৬৯৯ লিটার তেল। সুনামগঞ্জ থেকে ৯ হাজার লিটার, মৌলভীবাজারের প্রায় ৭ হাজার ৫০০ লিটার ও হবিগঞ্জে ৫০০ লিটার তেল জব্দ করা হয়।