মিরসরাইয়ে একটি বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয় ২০০৯ সালে। ২০১০ সালের শেষ দিকে সেখানে উপস্থিত হয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে মাটি ভরাটসহ নানা জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে প্রকল্পের কাজ আটকে ছিল।
অবশেষে বাস্তবায়িত হচ্ছে চট্টগ্রামের মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরীটি। প্রকল্পের কাজ শেষ করে প্রায় দুই বছর যাচাই-বাছাইয়ের পর ৮২ জন শিল্প উদ্যোক্তাকে প্লট বরাদ্দ দিয়েছে বিসিকের চট্টগ্রাম জেলা প্লট বরাদ্দ কমিটি।
২০১৭ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ৮৮টি প্লটের বিপরীতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। তবে যোগ্য প্লটগ্রহীতা না পাওয়ায় ১১৪টি আবেদনের মধ্যে ৮২টি প্রতিষ্ঠানকে প্লট বরাদ্দের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্লটগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানগুলো নয়টি কিস্তিতে পাঁচ বছরের মধ্যে শিল্প প্লটগুলোর অর্থ পরিশোধ করতে পারবে। প্রতিটি প্লটের প্রতি বর্গফুট জমির মূল্য রাখা হয়েছে ৮০০ টাকা করে। তবে চাইলে কোনো প্রতিষ্ঠান এককালীনও প্লটের ইজারামূল্য পরিশোধ করতে পারবে বলে জানিয়েছে বিসিক কর্তৃপক্ষ।
বিসিক সূত্রে জানা যায়, মিরসরাই বিসিকের এ-টাইপ প্লট ২৭টি, বি-টাইপ ৩৩টি ও সি-টাইপ প্লট ২৮টি। গত ৬ নভেম্বর প্লট বরাদ্দ কমিটির সভায় হালকা প্রকৌশল খাতে ১৯টি, খাদ্য ও খাদ্যজাত ১৯টি, রেডিমেড গার্মেন্ট ১৬টি, সিরামিকস ও নন-মেটালিক তিনটি, কেমিক্যাল অ্যান্ড অ্যালাইড ১০, রাবার-লেদার অ্যান্ড অ্যালাইড চার, প্যাকেজিং আট এবং বন ও বনজাত খাতে তিনটি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। প্লটগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্যের উৎপাদন শুরু করতে এরই মধ্যে গ্যাস, বিদ্যুৎসহ আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধার সন্নিবেশ করেছেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সন্নিকটে হওয়ায় পণ্য উৎপাদনের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ও রাজধানী ঢাকায় পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এসব কারণে মিরসরাই বিসিক শিল্পনগরীর প্লট ইজারা নিতে আগ্রহী রয়েছেন শিল্প উদ্যোক্তারাও। তবে একাধিক প্লট সংগ্রহে একটি প্রতিষ্ঠানের আবেদন বাতিল করে নতুন ও বিশেষায়িত খাতের উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিসিক চট্টগ্রামের উপমহাব্যবস্থাপক আহমেদ জামাল নাসের চৌধুরী জানান, মিরসরাই শিল্পাঞ্চলে একটি বিসিক শিল্পনগরী চালু করতে সরকার আন্তরিক ছিল। কিছুটা বিলম্বে হলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়েছে। যোগ্য উদ্যোক্তা না পাওয়ায় ছয়টি প্লট খালি রেখে ৮২ জন উদ্যোক্তাকে প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। চালু হলে এ শিল্পনগরীতে নতুন করে পাঁচ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
আনন্দবাজার/ইউএসএস