টায়ারের উৎপাদন বাড়াতে দেশে স্থানীয়ভাবে কিছু দেশি ও বিদেশি কোম্পানি টায়ার শিল্পে বিনিয়োগ বাড়াতে শুরু করেছে। আগামী বছরের মধ্যে কয়েকটি বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান টায়ারের বড় উৎপাদনে যাচ্ছে। বর্তমানে অ্যাপেক্স হুসেন টায়ার এবং গাজী টায়ার দেশের বড় বড় বাস ও ট্রাকের টায়ারের ৫ শতাংশ চাহিদা পূরণ করে আসছে। আর বাকি ৯৫ শতাংশ আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হচ্ছে। দেশীয় উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন ‘স্থানীয় উৎপাদন উৎসাহিত করতে টায়ার আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা উচিত।’
টায়ার শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এখন যমুনা গ্রম্নপ, মেঘনা গ্রম্নপ এবং সিয়াট বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ নিয়ে বাজারে প্রবেশ করছে। এছাড়া জিপিএইচ ইস্পাত এবং আরও কয়েকটি বড় কোম্পানিও টায়ার উৎপাদনে যাওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। দেশের চাহিদার তুলনায় বেশি টায়ার উৎপাদন করতে প্রস্তুত তারা। তথ্যমতে জানা যায় বাজারে তাদের প্রবেশের ফলে বছরে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা দেশে রাখা সম্ভব হবে। আগে যা আমদানিতে ব্যয় হতো সেখানে এখন এ খাতে ৫ হাজারেরও বেশি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
ইতিমধ্যেই যমুনা টায়ারস এবং রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বড় বাস, ট্রাক, যাত্রী পরিবহণের এবং মোটরসাইকেলের টায়ার উৎপাদন করতে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে প্রতিষ্ঠানটি।
অন্যদিকে, মেঘনা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড সাইকেলসহ বড় বাস ও ট্রাকের টায়ার উৎপাদনের জন্য ৫০০ কোটি টাকার নতুন পস্ন্যান্ট স্থাপন করেছে। প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন ‘আমদানি করা টায়ারের উপর বাংলাদেশের স্ব-নির্ভরতা তাদের এ শিল্পে আসার অনুপ্রেরণা’। সংস্থাটি বর্তমানে সাইকেলের টায়ার এবং টিউব রফতানি করছে।
এদিকে অ্যাপেক্স হুসেন গ্রম্নপ দুই দশকের বেশি সময় ধরে এই সেক্টরে রয়েছে এবং বর্তমানে মোটরগাড়ির টায়ার উৎপাদন করছে।
জানা যায়, সিয়াট বাংলাদেশে কারখানা করছে এ কে খান অ্যান্ড কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে। এ কোম্পানি বাংলাদেশে মোট ৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। সিয়াট টায়ার ভারত থেকে আমদানি করতে এখন বেশি খরচ পড়ে। দেশে উৎপাদিত হলে তা ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ দামে পাওয়া যাবে।
দেশে এখন সিয়াট গ্রিপ নামের মোটরবাইকের একটি টায়ারের দাম প্রায় ২ হাজার ৪০০ টাকা। দেশে উৎপাদিত হলে এর দাম নেমে আসবে ১ হাজার ৭০০ বলে জানান সিয়াটের কর্মকর্তারা। আরও জানা যায়, উদ্যোগটি সফল হলে বাংলাদেশে আরও ভারতীয় বিনিয়োগ আসবে। তখন ভারতীয় উদ্যোক্তারা কম খরচে পণ্য তৈরি করে আবার ভারতে রপ্তানি করতে পারবে।
টায়ার নিয়ে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানান, নতুন টায়ার শিল্প স্থাপনের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হচ্ছে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। তাই দেশীয় শিল্প রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিবে সরকার।
আনন্দবাজার/শাহী