একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। তবে অনেকে চাইলেও সারারাত চোখের পাতা এক করতে পারেনা। দিনের পর দিন এভাবে চলতে থাকলে শরীরে বাসা বাঁধে বিভিন্ন রোগ। এমনকি দীর্ঘদিন রাতে ভালো ঘুম না হওয়ার কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
ঘুমের অভাবে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে চলুন সেসব জেনে নেওয়া যাক-
মৃত্যু
ব্রিটেনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মৃত্যুর আশঙ্কা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় অনিদ্রা। যাদের পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব রয়েছে তাদের মৃত্যুর হার সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেক বেশি। যাদের ঘুম অনিয়মিত তাদের মধ্যেও একই সমস্যা দেখা যায়। এছাড়া ঘুমের অভাবে ভুগছেন এমন রোগীদের সংবহনতন্ত্রের রোগ হওয়ার ঝুঁকি আশঙ্কাজনক ভাবে বেশি হয়।
মানসিক অবসাদ
নিয়মিত রাত জাগা মানসিক অবসাদের সাথে একটি চক্রাকার সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ একটি সমস্যা অন্য সমস্যাকে ডেকে আনে। ২০০৫ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, উদ্বেগ বা মানসিক অবসাদে আক্রান্ত বেশির ভাগ মানুষই গড়ে ছ’ঘণ্টার কম ঘুমান। অনিদ্রার কারনে যেমন মানসিক অবসাদ তৈরি হয় আবার মানসিক অবসাদের কারণেও ঘুমে গরমিল হয়।
স্মৃতিভ্রংশ
মস্তিষ্কের ‘নিওকর্টেক্স’ এবং ‘হিপ্পোক্যাম্পাস’ নামক দু’টি অঞ্চলের সহায়তায় অস্থায়ী স্মৃতি স্থায়ী স্মৃতিতে রূপান্তরিত হয়। তাই এই প্রক্রিয়াটি ঠিক ভাবে সম্পন্ন হতে গেলে নিবিড় ঘুমের প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে এই প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে সম্পন্ন হয় না। তাই ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা যায়।
যৌন সমস্যা
পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া যৌন জীবনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা অনেক বেশি। যারা দেরি করে ঘুমাতে যান এবং পর্যাপ্ত ঘুমান না তাদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যেতে পারে। এই হরমোন কমে গেলে যৌন মিলনের ইচ্ছাও কমে যায়।
অন্যান্য রোগ
ঘুম কম হলে বেশ কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, যারা অনিদ্রায় ভুগছেন তরা একই সাথে অন্য কোনও বিপজ্জনক দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যাতেও ভুগছেন। ডায়াবিটিস, স্ট্রোক, অনিয়মিত হৃদ্স্পন্দন, হৃদ্রোগ ও উচ্চ্ রক্তচাপের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগ ঘুমের অভাবের সাথে তাল মিলিয়ে বৃদ্ধি পেতে পারে।
আনন্দবাজার/টি এস পি