১৯৯৭ সালে ১৬ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয় লক্ষ্মীপুর বিসিক শিল্পনগরী। উদ্দেশ্য ছিলো বেকার সমস্যার সমাধান ও শিল্পায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে জেলাটিকে সমৃদ্ধি করে তোলা। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিকল্পনা ও পরিদর্শনের অভাবে অপার সম্ভাবনাময় লক্ষ্মীপুর বিসিক শিল্পনগরীতে ২২ বছরেও গড়ে ওঠেনি উল্লেখযোগ্য শিল্প-কারখানা। যেগুলো গড়ে উঠেছে সেগুলোও এখন প্রায় বন্ধের পথে। এজন্য সংশ্লিষ্টরা অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, লোডশেডিং, গ্যাস সংকটের সঙ্গে অব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো সুযোগ-সুবিধার অভাবকে দায়ী করছেন।
শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, লক্ষ্মীপুর বিসিকে সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। রাস্তার অবস্থা বেহাল হওয়ায় কোনো পণ্যবাহী গাড়ি ভেতরে ঢুকতে চায় না। এছাড়া শিল্পভিত্তিক গ্যাস ও বিদ্যুৎ সুবিধার অভাবে উৎপাদন খরচ দিন দিন বাড়ছে। ফলে অনেক ব্যবসায়ী প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে না পেরে এরই মধ্যে শিল্পপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ করে দিয়েছেন। বাকিদের অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার পথে। এসব কারণে নতুন কোনো উদ্যোক্তা এখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে আগ্রহী হন না।
বিসিকের তথ্যমতে, ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৫ সালে মোট ১৬ দশমিক ৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে বিসিক কর্তৃপক্ষ। পরে ৯ দশমিক ৮২ একর জমিতে মোট বরাদ্দযোগ্য প্লট ১০০টির মধ্যে ৯৮টি বরাদ্দ দেয়া হয়।
লক্ষ্মীপুর বিসিকের উপব্যবস্থাপক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, এ নগরীতে মোট ৬১টি শিল্প ইউনিটের মধ্যে ৯৮টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ৪৩টি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প-কাখানার কার্যক্রম রয়েছে। এর মধ্যে উৎপাদনে আছে ২৮টি, সাময়িক বন্ধ আছে নয়টি এবং নির্মাণাধীন রয়েছে ছয়টি প্রতিষ্ঠান। নিয়ম অমান্য করায় ২৫টি প্লটের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার যে বরাদ্দ দেয় তাতে সব কাজ করা সম্ভব নয়। এ বছর লক্ষ্মীপুর বিসিক ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। এর মাধ্যমে সাড়ে তিনশ ফুট ড্রেন ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার সংস্কার করা হবে।
এ বিষয়ে বিসিক প্লট বরাদ্দ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক অঞ্চন চন্দ্র পাল বলেন, লক্ষ্মীপুর বিসিক অনেকটাই অবকাঠামোগত অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে। আমরা চেষ্টা করছি, যেসব উদ্যোক্তা নগরীতে প্লট বরাদ্দ নিয়ে উৎপাদনে যাচ্ছেন না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। আর যারা উৎপাদনে রয়েছেন, তাদের সুরক্ষার জন্য অবকাঠামোগত সহযোগিতার পদক্ষেপ নিতে।
আনন্দবাজার/ইউএসএস