*শীর্ষে ইসলামী ব্যাংক, দ্বিতীয় ডাচ বাংলা ব্যাংক
সর্বনিম্ন আয়ের পর আবার গতি ফিরছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে। রমজানের আগে প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করেছে। আসন্ন রমজান ও ঈদ উৎসব ঘিরে এ আয় আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চলতি মাসের প্রথম ১৬ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১০৩ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ৮ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাসের শেষে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার পৌঁছাবে বলে আশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর নগদ আড়াই শতাংশ প্রণোদনার জন্যই রেমিটেন্সপ্রবাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনীতি চাঙা হতে শুরু করেছে, যা রেমিটেন্স বৃদ্ধির আরেক কারণ। আসন্ন রমজান ও ঈদ উৎসব ঘিরে এ প্রবাহ আরও বাড়বে বলে আশা তাদের।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, মার্চের প্রথম ১৬ দিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৮২ কোটি ১৮ লাখ মার্কিন ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪১ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে এক কোটি ৯২ লাখ মার্কিন ডলার।
চলতি মাসের প্রথম ১৬ দিনে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২২ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। এরপর রয়েছে ডাচ–বাংলা ব্যাংক। ব্যাংকটির মাধ্যমে এসেছে ১৫ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৪৯ লাখ ও সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৬ কোটি এবং সাউথইস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার প্রবাসী আয়।
আলোচিত সময়ে সরকারি বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বিদেশি ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কোনো রেমিটেন্স পাঠায়নি প্রবাসীরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, সবশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৪৯ কোটি ডলার, যা গত ২১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে পাঠানো প্রবাসী আয়ের এ অংক আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৬ শতাংশ কম।
২০২১-২২ অর্থবছরের ৮ মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৩৪৪ কোটি ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৯৬ কোটি বা প্রায় ১৮ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথম আট মাসে রেমিট্যান্স এসেছিলো ১ হাজার ৬৪০ কোটি ডলার।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিলো ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ, আগস্টে ১৮১ কোটি, সেপ্টেম্বরে ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ, অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ, নভেম্বর ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ, ডিসেম্বরে ১৬৩ কোটি এবং জানুয়ারিতে আসে ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।
বৈধ উপায়ে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোয় প্রবাসীদের উদ্বুদ্ধ করতে ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা দিয়ে আসছিল সরকার। ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নগদ প্রণোদনা আরও বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়। অর্থাৎ এতদিন কোনো প্রবাসী দেশে ১০০ টাকা পাঠালে, তার পরিবার বা স্বজন পেত ১০২ টাকা। এখন পাচ্ছে ১০২ টাকা ৫০ পয়সা।
আনন্দবাজার/শহক