গত দুই বছর ধরে করোনার কারণে মেলাটি বন্ধ ছিল। করোনা পরিস্থিতি ভালো হওয়ার কারণে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ঐতিহ্যবাহী গোপীনাথপুর দোল পূর্ণিমার মেলা এবার শুরু হয়েছে। ৫১৫ বছরের পুরনো এ ঐতিহ্যবাহী মেলা। মেলার প্রধান আকর্ষণ ঘোড়ার হাট। ভারতীয় তাজীসহ নানান জাতের ঘোড়া পাওয়া যায় এ হাটে।
ময়মনসিংহ, জামালপুর, টাঙ্গাইল, বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর, গাইবান্ধা, পাবনা, রাজশাহী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘোড়া ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য এসেছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। সারা বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র ঘোড়া বেচাকেনার হাট এই গোপিনাথপুর দোলের মেলা। প্রতি বছর দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে এ মেলা শুরু হয়।
দোল পূর্ণিমা মেলা কমিটি আয়োজকরা জানান, শুধু ঘোড়া বিক্রির জন্য এ মেলার সুনাম দীর্ঘদিনের। স্বাধীনতার পরও মেলায় বিভিন্ন দেশের ঘোড়া এদেশে আসতো। এখন তা আসে না। এখন মেলা বসে দেশের বিভিন্ন স্থানের ঘোড়া পালনকারীরা। এই মেলাকে কেন্দ্র করে আশেপাশের গ্রামে গ্রামে চলে উৎসবের আমেজ।
এলাকাবাসীরা জানান, এ মেলা ঘিরে আশপাশের চার উপজেলার শতাধিক গ্রামে আনন্দ-উৎসব বিরাজ করে। এসব গ্রামের মানুষ সাংসারিক জিনিসপত্র কেনাকাটার জন্য সারা বছর মেলার অপেক্ষা করতেন। মেলাটি আগে মাসব্যাপী চলত। এখন ১৩ দিনব্যাপী চলে। করোনার জন্য ২০২০ ও ২১ সালে মেলা বন্ধ ছিল। এর আগে কখনো এ মেলা বন্ধ হয়নি। এবারও মেলা বসবে কি না, তা নিয়ে লোকজনের মনে সন্দেহ ছিল। এ কারণে এবার মেলা তেমন একটা জমেনি।
বগুড়ার নন্দীগ্রামের রেজাউল করিম বলেন, ‘পাঁচটি ঘোড়া মেলায় এনেছি। দুটি ঘোড়া ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। মেলায় এবার ঘোড়ার আমদানি কম হয়েছে। দূরের ব্যাপারীরাও তেমন আসেননি। এ কারণে ঘোড়ার ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে না।’
মেলা কমিটির সভাপতি ও গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, দেশের অনেক স্থানের মানুষ এখনো জয়পুরহাট জেলা চেনেন গোপীনাথপুর মেলার সূত্র ধরে। গোপীনাথপুর দোলপূর্ণিমা মেলা শুধু জয়পুরহাট জেলার নয়, উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্য। মেলার অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মেলায় লোকজন যাতে নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারে, এ জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মেদ ভুঞা বলেন, মেলার নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া সাদা পোশাকেও পুলিশ টহল দিচ্ছে।