ঢাকা | শনিবার
২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাপ সামলাতে কূটনীতি

চাপ সামলাতে কূটনীতি

করোনা মহামারির ধাক্কা সমালে নিয়ে আগের চেয়ে ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে রপ্তানিখাতে নেতৃত্ব দেওয়া দেশের তৈরি পোশাকখাত। তবে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রপ্তানিতে প্রভাব পড়ার পাশাপাশি বেড়েছে বিভিন্ন কাঁচামাল ও পরিবহন ব্যয়। তাছাড়া জাতিসংঘে রাশিয়ার বিপক্ষে অবস্থান না নেয়ায় এক ধরণের চাপ তৈরি হয়েছে। এসব সামলে নিতে নানা ধরণের ‘অ্যাপারেল ডিপ্লোমেসি‘ বা পোশাক কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ঘুরে দাঁড়ানোর সময়টি আমাদের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। উদ্যোক্তারা ক্রমবর্ধমান উৎপাদন ব্যয় ও সাপ্লাই চেইনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। তারা নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরি ও সবুজ শিল্পায়নে বিপুল বিনিয়োগ করলেও সে অনুযায়ী মূল্য পাচ্ছেন না। যদিও বা চলতি সময়ে বিগত সময়ের তুলনায় মূল্য কিছুটা বেড়েছে, তবে সেটা কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এর বিপরীতে কারখানার উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে অনেক।

রাজধানীর হোটেল আমারিতে গত মঙ্গলবার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ খাতের বিভিন্ন দিক ও সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ সফর নিয়ে কথা বলেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। মতবিনিময় সভায় ‍যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে ফারুক হাসান বলেন, ‘যেকোনো যুদ্ধেরই একটা প্রভাব রপ্তানি বাজারের ওপর পড়ে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবও পোশাক রপ্তানির ওপর পড়বে। এই যুদ্ধের কারণে তেলের দাম বেড়ে গেছে, শিপিং কস্ট বেড়ে গেছে। কনটেইনারের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে।

তাছাড়া রপ্তানি হ্রাস এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে পেমেন্ট জটিলতা নিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, এই বছর রাশিয়ায় আমাদের এক বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেটা আর পূরণ হবে না।’ তবে অন্যান্য বাজারে সেটা পুষিয়ে নেয়ার জন্য কাজ করবেন বলে জানান তিনি। অনেক রপ্তানিকারকের পেমেন্ট পাওয়া নিয়েও সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে, সেগুলো সমাধানে সরকারের সহায়তায় কাজ চলছে বলে জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে সম্প্রতি জাতিসংঘের ভোটাভুটিতে রাশিয়ার বিপক্ষে ভোট না দেয়ায় পশ্চিমা বিশ্ব থেকে একটা চাপ আছে বলে স্বীকার করেন নেন বিজিএমইএ সভাপতি। এতে ইউরোপের অন্যতম বাজার জার্মানিসহ অনেকে অসন্তুষ্ট হলেও এসব চাপ উতরে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পোশাক ব্যবসায়ীদের এ নেতা। এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তোরন আনন্দ ও গর্বের বিষয় বলছে বিজিএমইএ। তবে এই উত্তোরণের ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিশেষ করে পোশাকশিল্প খানিকটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে এবং যে বাণিজ্য সুবিধাগুলো বর্তমানে পাচ্ছে, তা খানিকটা ব্যাহতও হবে বলে মনে করছে সংস্থাটি। তাই বিদেশ সফরে মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে গ্র্যাজুয়েশনের প্রস্তুতি নিতে কিছুটা সময় ও সুযোগ প্রদান নিয়ে আলোচনা করে পোশাক মালিকদের প্রতিনিধিরা।

যুক্তরাষ্ট্র সফর
ব্যবসায়ীক কূটনীতির দিকটি তুলে ধরে ফারুক হাসান বলেন, বিজিএমইএ অ্যাপারেল ডিপ্লোমেসি নিয়ে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপের বেশ কটি দেশ সফর করেছি। সর্বশেষ চলতি মাসের ৮-১১ তারিখ বিজিএমইএ নেতারা যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন।’ র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ইঙ্গিত করে ফারুক হাসান বলেন, আমাদের অন্যতম প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যেন কোনো অনিশ্চয়তার ছায়া না পড়ে আমরা সে চেষ্টা করছি।

এবারের সফরে আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএফএফএ) আয়োজিত এক্সিকিউটিভ সামিটে অংশগ্রহণ করেছে বিজিএমইএ। সামিটে পোশাক খাতে চলমান অগ্রগতিগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি এএফএফএ’র সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বিশ্বখ্যাত এক হাজারের বেশি ব্র্যান্ড, রিটেইলার এবং প্রস্তুতকারকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থাটির সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ‘একটি স্বস্তির বিষয়’ বলছে বিজিএমইএ। কারণ বিশ্ববাজারে এ সংস্থাটির ব্যাপক প্রভাব রয়েছে বলে জানান ফারুক হাসান।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করেছে বিজিএমইএ। বিশ্ববাজারের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পোশাক শিল্প কটন থেকে নন-কটন আইটেম ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইলে মনোযোগ বাড়াচ্ছে। তাছাড়া অল্প পানিতে জন্মানোর সক্ষমতা, কম কীটনাশকের ব্যবহার, প্রতি একরে উচ্চ ফলন এবং যে কোন বাণিজ্যিক ফলনের চেয়ে একর প্রতি বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ প্রভৃতি কারণে ইন্ডাস্ট্রিয়াল হেম্প ফাইভারের উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। এ শিল্পের বিশেষজ্ঞ মার্ক ডিসা, বিজনেস ডেভলপমন্ট ওপান্ডা বায়োটেকের সঙ্গেও বৈঠক করেছে বিজিএমইএ।

ইউরোপ সফর
অঞ্চল হিসেবে সবচেয়ে বড় পোশাকের গন্তব্য ইউরোপে ফেব্রুয়ারিতে সফর করেছে বিজিএমইএ প্রতিনিধি দল। এসময় ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের বেশ কিছু সদস্যের সঙ্গে বৈঠক হয়। এতে ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের জন্য ১০ বছর চলমান বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে শিল্পে শ্রমমান এবং টেকসই ও পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নে যেসব অগ্রগতি হয়েছে, তা তুলে ধরা হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশনের পর জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রাপ্তির বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রস্তাবিত জিএসপি রেগুলেশনে কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন, সে বিষয়গুলোও আলোচনা হয়েছে। উল্লেখ্য, জিএসপি সুবিধা নিয়ে আলোচনা করতে একটি ইউরোপীয় প্রতিনিধি দল এখন দেশে রয়েছে। তাদের কয়েকজনের সঙ্গেও আগাম দেখা করে আসে বিজিএমইএ।

এদিকে এবারের সফরে প্রথমবারের মতো বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করে বিজিএমইএ। বৈঠকে মূল বিষয় ছিলো স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তোরণের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জন্য ট্রানজিশন পিরিয়ড বাড়ানো। বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন স্মুথ ও টেকসই করার জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সুবিধাগুলোতে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর নমনীয়তা প্রদর্শন প্রত্যাশা করা হয়। এ ব্যাপারে ডব্লিউটিও যেন তার সদস্যদের সমর্থন সংগ্রহ করে, সে ব্যাপারে অনুরোধ করা হয়। তাছাড়া বাণিজ্যে নেগোশিয়েশন সক্ষমতা এবং অর্থনৈতিক কূটনীতিতে অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বৃদ্ধি, মুক্ত বানিজ্য চুক্তি ও আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাব্যতা বিষয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে সহযোগিতা চাওয়া হয়।

অন্যদিকে ৪০টির বেশি দেশের ২৪০০ রিটেইলার, আমদানিকারক, ব্র্যান্ড এবং অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিত্বকারী আমফোরির সঙ্গেও বৈঠক হয়। ব্রাসেলসে সংস্থাটির সদর দপ্তর এটা বিজিএমইএ-র সঙ্গে প্রথমবারের বৈঠক। বৈঠকে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে সামাজিক ও পরিবেশগত টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিজিএমইএ এবং আমফোরি একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়। তাছাড়া সংস্থাটি সদস্যদের মাঝে বাংলাদেশকে একটি নিরাপদ এবং টেকসই গন্তব্য হিসেবে প্রচার করার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে।

বিভিন্ন শ্রম সংস্থা
এবারের সফরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিভিন্ন শ্রম সংগঠনের সাথেও কথা বলেছে বিজিএমইএ। জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও-এর সদর দপ্তরে সংস্থার মহাপরিচালকের সঙ্গে আমরা দ্বিপাক্ষিক সাক্ষাৎ হয়। এসময় বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে নিরাপদ ও শোভন কর্মপরিবেশের অগ্রগতির প্রশংসা করা হয় বলে জানায় বিজিএমইএ। তাছাড়া প্রথমবারের মতো ব্রাসেলসে আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষাতে ৪০ লাখ শ্রমিকের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্ভাব্য উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। সভাগুলোতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে বিগত দশকে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রে যে দৃষ্টান্তমূলক পরিবর্তন ঘটেছে তা তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে শ্রম আইন সংশোধন, নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি, নিরাপত্তা বিষয়ে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ এবং শ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি।

বাণিজ্য ঘাটতি
বর্তমানে দেশে আমদানি বাড়ায় বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে বলে জানায় বিজিএমইএ। অন্যদিকে গতবছরের তুলনায় কমেছে রেমিট্যান্স। ফলে চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে দেশের কারেন্ট একাউন্ট ব্যালেন্স দাঁড়িয়েছে -১০.০৬ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২০-২১ অর্থবছরে একই সময়ে ছিলো +১.৫৬ বিলিয়ন ডলার। তবে রপ্তানিতে পোশাকখাত ঘুরে দাঁড়াতে শুরুর সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য ও কারেন্ট একাউন্ট ব্যালেন্স এই পর্যায়ে ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে বলে জানায় বিজিএমইএ। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সামষ্টিক অর্থনীতিতে ভারসাম্য বা স্থিতিশীলতা, অর্থাৎ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ও বিনিময় হার এবং মূল্যস্ফিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধিকে ধরে রাখার বিষটিতে আরও গুরুত্ব দিতে হবে মনে করছে সংস্থাটি।

সুপারিশ
রপ্তানি বাড়াতে আসন্ন বাজেটে পোশাক শিল্পের কিছু সুপারিশ তুলে ধরে বিজিএমইএ। এতে বলা হয়- বর্তমান সময়ে তাদের প্রথম এবং প্রধান প্রত্যাশা হলো নীতি স্থিতিশীলতা। শিল্পের সক্ষমতা ধরে রাখতে ও বিনিয়োগের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য প্রয়োজন আর্থিক ও অনান্য নীতির ধারাবাহিকতা। বিশেষ করে শুল্ক-কর ও মূসক হার একটি নির্দিষ্ট সময়কালের জন্য নির্ধারিত থাকলে বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সুবিধা হয়। তাই কর ও রাজস্ব সংক্রান্ত নীতিগুলো অন্তত ৫ বছরের জন্য অপরিবর্তিত রাখার দাবি জানায় বিজিএমইএ।

দ্বিতীয়ত, বর্তমানে বৈশ্বিক বাজারে টিকে থাকার জন্য যে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেটি হল লিড টাইম কমানো এবং দ্রুত ডেলিভারি দিতে সক্ষম হওয়া। বর্তমানে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পোশাকের উদ্ভাবন হচ্ছে। এসব পোশাকের জন্য এখন অনেক নতুন ধরনের পণ্য লাগছে, যেগুলো এইচএস কোড সংক্রান্ত জটিলতার মধ্যে পড়ছে। ফলে রপ্তানিতে সমস্যা হচ্ছে। বন্ড লাইসেন্সে এইচএস কোডের সঙ্গে নতুন কাঁচামাল ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট উপকরনগুলো অন্তর্ভুক্তকরণের মতো প্রক্রিয়াগুলো সহজীকরণ করা হলে তা শিল্পের জন্য অনেক সহায়ক হবে বলে জানায় বিজিএমইএ।

সবশেষ
সবশেষে পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণ ও দক্ষতা উন্নয়নে জোর দেয়ার কথা বলেন বিজিএমইএ। কম দামে কেউ আর এখন অর্ডার নিচ্ছে বলেও জানান ফারুক হাসান। এক প্রশ্নের জবাবে সর্বশেষ বোর্ড মিটিংয়ে ওয়াক আউটের মতো ঘটনা ঘটেছিল বলে স্বীকার করেন বিজিএমইএ সভাপতি। যা সংস্থাটির ইতিহাসে প্রথম ঘটনা বলেও জানান তিনি।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন