ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধুকে চেনানো হবে বড় কাজ

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আমাদের এখন বড় কাজ হবে, বঙ্গবন্ধু কে এবং কী, সেটা নতুন প্রজন্মকে শিখানো। এজন্য বঙ্গবন্ধুকে জানার বিষয়টি সহজ করে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু সমন্ধে জানার জন্য আলাদা বুক কর্নার তৈরি করে দিতে হবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার সচিবালয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম ও আইনি ভাবনা শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।

আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার যে অপসংস্কৃতি চালু করা হয়েছিল, তা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, জাতির পিতাকে এদেশের মাটিতেই হত্যা করা হয়েছিল, একথা মনে রাখতে হবে। আনিসুল হক বলেন, আসল ষড়যন্ত্র ছিল, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে হত্যা করা। এই ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনও চলছে। হয়তো এখন আর সেটা করা যাবে না।

তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার শত্রু, যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্বাস করে না, যারা বঙ্গবন্ধুকে এখনো জাতির পিতা বলে মানতে পারে না, তারা চুপ করে বসে থাকতে পারেনা। তাদের বিষয়ে সব সময় সজাগ থাকতে হবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কখনই অন্যায়ের সাথে আপষ করেননি, গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক পন্থার বাইরে রাজনীতি করেননি। তাঁর পুরো রাজনৈতিক জীবনে অপরিপক্ক সিদ্ধান্ত নেননি। বাঙালিদের কোথায় যেতে হবে, কি করতে হবে তার সবকিছুই তিনি ৭ই মার্চের ভাষণে বলে দিয়েছিলেন। শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী বাঙালিদের ওপর আক্রমণের পরপরই তিনি ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির তাঁর স্বাগত বক্তৃতায় বলেন, স্বাধীনতার পর পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরে আসার পরপরই তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতির পুনর্গঠনে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণে বঙ্গবন্ধু ভারতীয় সৈন্যবাহিনী প্রত্যাহার, মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সমর্পণ, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা, ১১ মাসের মধ্যে সংবিধান, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন, প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন, সাধারণ নির্বাচন আয়োজন, পাকিস্থানে আটকে পড়া বাঙ্গালিদের ফেরত আনা, নারী পুনর্বাসন বোর্ড, সুপ্রীমকোর্ট প্রতিষ্ঠা, ভূমি ব্যবস্থাপনায় আমূল সংস্কার, শিল্প বিকাশের নতুন নতুন উদ্যোগ, কৃষির আধুনিকায়নে সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণ, প্রাথমিক স্কুল সরকারিকরণসহ দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতকি উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকারমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেন এবং সফলভাবে বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যান।

আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন আপষহীন নেতা। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়াকালীন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে বঙ্গবন্ধুকে জরিমানা করা হলেও তিনি এ জরিমানা দেননি। এ জরিমানা না দেওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর ছাত্রত্ব বাতিল করেছিল। তার পরও তিনি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি।

লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির এর সভপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হুমায়ুন ফরহাদ, যুগ্ম সচিব কাজী আরিফুজ্জামান, যুগ্ম সচিব মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌস, উপসচিব গাজী কালিমুল্লাহ প্রমুখ বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম ও আইনি ভাবনা বিষয়ক বক্তৃতা করেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তাগণ সশরীরে বা ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন।

আনন্দবাজার/টি এস পি

সংবাদটি শেয়ার করুন