ঢাকা | শনিবার
২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেঁচে আছেন স্বামী বিধবাভাতা নিচ্ছেন স্ত্রী

বেঁচে আছেন স্বামী বিধবাভাতা নিচ্ছেন স্ত্রী

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আটপাড়া ইউনিয়নের হাঁসাড়গাঁও গ্রামে স্বামী জীবিত থাকার পরেও দুই নারী পাচ্ছেন সরকারের বিধবা ভাতা! ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের হাঁসাড়গাঁও গ্রামে এমনই দুই নারীর সন্ধান মিলেছে। ওই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্যের কারসাজিতে ও আর্থিক সুবিধা লেনদেনের কারণে এমনটা হয়েছে। হাঁসাড়গাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও সিংপাড়া বাজারের ফল বিক্রেতা বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী সায়েরা বেগম (৫০) ও একই বাড়ির কর্মজীবি হালিমের স্ত্রী গোলেনুর বেগম (৫৫) প্রায় ১০ বছর যাবত বিধবা ভাতা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

সরেজমিনে জানা যায়, সাবেক মেম্বার শাজাহানের প্রতিবেশী সায়েরা বেগমের স্বামী বিল্লাল হোসেন ও গোলেনুর বেগমের স্বামী হালিমের পরিবারের বসবাস। বিল্লাল হোসেন স্থানীয় সিংপাড়া বাজারে ফলের ব্যবসা করেন ও হালিম শেখ বিভিন্ন কাজকর্ম করছেন।

স্থানীয়রা জানান, শাজাহান দুইবার এ ওয়ার্ডের মেম্বার ছিলেন। তিনি প্রতিবেশী দুই নারীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে বিধবা ভাতার কার্ড দিয়েছিলেন।  সায়েরা বেগম ও গোলেনুর বেগমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ঘরের দরজায় তালা ঝুলতে। এ সময় গোলেনুর বেগমের পুত্রবধূ নাছিমা বেগম (২৫) জানান, তারা বাড়িতে নেই। তবে তিনি স্বীকার করেন তার শাশুরিসহ অপর নারী বিধবা ভাতা পচ্ছেন।

এ বিষয়ে ৯নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য ওহিদুজ্জামান নান্নু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমার হাতে ভাতা গ্রহীতাদের নামের তালিকা আসার পরে জানতে পারি। সায়েরা বেগম ও গোলেনুর বেগমের তো স্বামী আছেন।

সাবেক ইউপি সদস্য মো. শাজাহানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, কার স্বামী আছে আর কার স্বামী নেই, এটা দেখার জন্য কি সরকার আমাকে ডিউটি দিয়েছে? তাহলে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আপনার কাজ কি ছিল সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এড়িয়ে যান। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এতোদিন পরে এটা নিয়ে কেন চুলকাচ্ছেন এ বলেই মোবাইল ফোন রেখে দেন।

মহিলা ইউপি সদস্য পারভীন বেগম জানান, এটা সাবেক মেম্বার শাজাহানের দায়িত্ব কর্তব্যের অবহেলার কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে।

আটপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সবেমাত্র দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। এমনটা হয়ে থাকলে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে তা বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে সুপারিশ করা হবে। এ ধরনের অনিয়ম গ্রহণযোগ্য নয়।

শ্রীনগর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মাহফুজা পারভীন চৌধুরী কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। অমিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন