ঢাকা | রবিবার
২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে

ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে

রাজবাড়ীতে সুইট বিউটি ও ভারতীয় উন্নত জাতের ক্যাপসিকাম (মরিচ জাতীয় সবজি/বেলপিপার) এর বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। ক্যাপসিকাম চাষে লাভ দেখে নতুন করে অনেকে আবার ক্যাপসিকাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এতে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হচ্ছে অন্যদিকে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

ক্যাপসিকাম চাষিরা জানান, অন্য ফসলের তুলনায় অনেক বেশি লাভ হচ্ছে ক্যাপসিকাম চাষ করে। তাই ভিনদেশি এ সবজি চাষে ঝুঁকে পড়ছেন চাষিরা। রাজবাড়ী জেলায় উৎপাদিত ক্যাপসিকাম রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে।

জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্যাপসিকাম চাষ হচ্ছে রাজবাড়ী জেলা সদরের মিজানপুর ও বসন্তুপুর ইউনিয়নে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ক্যাপসিকাম চাষ বেড়েছে অনেক বেশি।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, রাজবাড়ী জেলা সদরে চলতি বছর ১ হেক্টর জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করছে চাষিরা। এর মধ্যে জেলা সদরের মিজানপুর ইউনিয়নে ৫ বিঘা ও শহীদওহাবপুর ইউনিয়নে ২ বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ হচ্ছে। ফসল ক্ষেতের পরিচর্যা, ফলন তোলা আর আগাছা দমনের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। রোপনের ৫০ দিন পরে গাছে ফলন আসে। একটি গাছ থেকে ৩ বার ফলন পাওয়া যায়। ফেব্রুয়ারী থেকে মার্চ মাস বাংলায় প্রতি বছরের অগ্রহায়ন মাসে ক্যাপসিকাম আবাদ করা হয় এবং মাঘ মাসের মাঝামাঝি ফসল তোলা হয়। প্রতিকেজি ক্যাপসিকাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

সরেজমিনে মিজানপুর ইউনিয়নের বেনিনগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ৫ বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেছে কৃষক শহীদুল ইসলাম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি বছর ক্যাপসিকামের ফলন ভালো হয়েছে। রোগ ও পোকার আক্রমণ ছাড়াই চলতি মৌসুমে সেখানে অন্য ফসলের চেয়ে উন্নত জাতের ক্যাপসিকাম’র ব্যাপক আবাদ হয়েছে।

চাষি শহিদুল ইসলাম বলেন, ৩ বছর ধরে ক্যাপসিকাম চাষাবাদ করছি। গত বছর ক্যাপসিকাম চাষ করে লাভবান হয়েছি। এ বছর ৫ বিঘা জমিতে চাষাবাদ ক্যাপসিকাম করেছি। আমার ক্ষেতে ১২ হাজার গাছ আছে। এ বছর ফলন হয়েছে প্রায় ৬ টন। বিঘা প্রতি ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিঘা প্রতি ফল বিক্রি করেছি দেড় লাখ টাকা। রাজবাড়ী জেলার কয়েকটি রেষ্টুরেন্টসহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে ক্যাপসিকাম সাল্পাই করি। বাজারে প্রতি কেজি পাইকারি দরে ১১০ টাকা আর খুচরা পর্যায়ে ২০০ টাকা। আশা করি এবার ১০ লাখ টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি করতে পারবো ।

চাষি জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত ২ বছর ধরে ক্যাপসিকাম আবাদ করা হচ্ছে। স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা কম হলেও ঢাকার বাজারে এর চাহিদা ব্যাপক। বড় বড় রেস্টুরেন্টে পিজা, ফ্রাইড রাইস, স্যুপ,পাস্তা ও সবজিসহ বিভিন্ন খাবারে ক্যাপসিকাম ব্যবহৃত হয়। দেশি মরিচের চাষ করে তেমন লাভ করতে পারেননি। পরে ক্যাপসিকাম চাষ করে আশপাশের অনেকেই লাভবান হওয়ায় এ সবজি চাষ করছি। জমি উর্বর হওয়ায় ক্যাপসিকাম’র ফলন ভালো হয়েছে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাহাউদ্দিন শেখ জানান, পদ্মা নদী পাড়ের জেলা রাজবাড়ী। এ জেলার মাটিতে ফসল ও শাক সবজি চাষাবাদে বেশ উপযোগী। মাটি অত্যন্ত উর্বর তাই দুই-তিন বছর ধরে কৃষকরা ক্যাপসিকাম চাষ করে ভালো ফল পাচ্ছেন। কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে দিন দিন আবাদ বাড়ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন