ঢাকা শহরে বাইক রাইড শেয়ারিং তথা উবার-পাঠাও সেবা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রধান সড়ক থেকে গলিপথ, নতুন থেকে পুরান ঢাকা, এমনকি মোড়ে মোড়ে দেখা মেলে বাইক চালকদের। তবে আইনের দুর্বলতায় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে এ সেবা ছড়িয়ে পড়ায় বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি।
ঢাকার সড়কেও মোটরবাইক নামছে লাগামহীনভাবে। পাশাপাশি ঢাকায় বাইক দুর্ঘটনা বেড়ে গেছে, যদিও মোটরবাইক নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই।
তথ্যমতে, ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নিবন্ধন নিয়ে ঢাকায় মোটরবাইক নেমেছে প্রায় দুই লাখ ২৭ হাজার। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন বাইক নামে ১০৩টি করে। অথচ ২০১৭ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত আড়াই বছরে ঢাকায় বাইক নেমেছে প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার। এতে গত আড়াই বছরে গড়ে প্রতিদিন বাইক নেমেছে ২৫২টি করে। অর্থাৎ ঢাকার সড়কে বাইক নামার হার বেড়ে আড়াইগুণ হয়েছে।
বর্তমানে ঢাকায় নিবন্ধিত বাইকের সংখ্যা ছয় লাখ ৬৭ হাজার, যদিও ২০১০ সাল পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল দুই লাখ ১০ হাজার। অর্থাৎ গত সাড়ে আট বছরে ঢাকায় বাইকের সংখ্যা তিনগুণ হয়েছে। যদিও রাজধানীর যানজটে সময় অপচয়কে বাইকের সংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়। তবে রাইড শেয়ারিং চালুর পর ঢাকায় বাইক নামার হার খুব দ্রুত বাড়ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস হয়ে উঠেছে রাইড শেয়ারিং সেবা। আবার অনেকের পার্টটাইম আয়ের উৎস রাইড শেয়ারিং। নিয়মিত কাজের পাশাপাশি অফিসে যাতায়াতকালেও অনেকে বাইকে যাত্রী বহন করছেন। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় বাইক নামার হার অনেক বেড়ে গেছে, যদিও একটি শহরের জন্য এটি ভালো লক্ষণ নয় বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ঢাকায় অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাইক বাড়ছে, যা রাজধানীর পরিবহন খাতের জন্য মোটেও ভালো চিত্র নয়। থাইল্যান্ডেও একসময় বাইক অনেক বেড়ে গিয়েছিল। পরে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় দেশটিকে।
তিনি বলেন, বাইক দিয়ে যানজট পরিস্থিতিতে জনগণ সাময়িক উপকার পেলেও পরে তা বড় ধরনের সমস্যা হয়ে উঠবে। এছাড়া ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ এখন বাইক। তাই বিআরটিএর উচিত বাইকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া।
মন্তব্য করুন