ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব গোপন করায় ১৮ মাসের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। দুই বছর আগে একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে এক ক্রিকেট জুয়াড়ির কাছ থেকে অনৈতিক প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি । কিন্তু তা তৎক্ষণাৎ প্রত্যাখ্যান করলেও আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগকে না জানিয়ে গোপন করেন সাকিব।
পরে আন্তর্জাতিক জুয়াড়িদের কল রেকর্ড ট্র্যাকিং করে এ ব্যাপারে তারা তথ্য উদ্ধার করে আইসিসি । ওই জুয়াড়ি আইসিসির কালো তালিকায় থাকাদের মধ্যে একজন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর সম্প্রতি সাকিবের সঙ্গেও কথা বলেন আইসিসির অ্যান্টিকরাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিট (আকসু) প্রতিনিধিরা। জানা গেছে, সাকিবও নিজের ভুল স্বীকার করেছেন তাদের কাছে। আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, জুয়াড়ির প্রস্তাবকে তেমন গুরুত্ব দেননি বলেই জানাননি। আর বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়াটাই তার জন্য কাল হয়েছে। মাসুল হিশেবে সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন তিনি। বিসিবির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দুই একদিনের মধ্যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাকিবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানাবে আইসিসি।
এইদিকে আইসিসি ইতোমধ্যে সাকিবের ব্যাপারে বিসিবিকে বিস্তারিত জানিয়েছে। আইসিসি তাকে জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন না করার নির্দেশনাও দিয়েছে । আর এ কারণে অসুস্থ বলে জাতীয় দলের অনুশীলনে যোগ দিচ্ছেন না সাকিব। বিসিবির একাধিক পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাকিব পরবর্তী সময়ে আকসুকে সহায়তা করায় একটু নমনীয় তারা। শাস্তি ১৮ মাস নির্ধারণ করা হলেও সাকিব আপিল করলে সেটা কমিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ইতিমধ্যে। সাকিব বিসিবির সহযোগিতা চাওয়ার পাশাপাশি আইসিসির কাছেও ক্ষমা চেয়ে শাস্তি মওকুফের আবদেন করবেন। তবে আইসিসি দুর্নীতি দমন বিভাগের নিয়ম ও শৃঙ্খলা মেনে চললে এই শাস্তি ছয় মাসে নেমে আসতে পারে। এটাই এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন শাস্তি।
আইসিসির নীতিমালায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, জুয়াড়িদের কাছ থেকে ম্যাচ বা স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ পেলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে জানাতে হবে। না হয় আইসিসির দুর্নীতি দমন সংস্থা আকসুকে দ্রুত অবহিত করতে হবে। কোনো ক্রিকেটার, ম্যাচ অফিসিয়াল, টিম অফিসিয়ালসহ সরাসরি ক্রিকেটে সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তি জুয়াড়িদের কাছ থেকে পাওয়া অনৈতিক প্রস্তাব যদি না জানায় এবং তা লুকানোর চেষ্টা করে কিংবা আকসুর জিজ্ঞাসাবাদেও অস্বীকার করলে তার বিরুদ্ধে ‘আইসিসি অ্যান্টিকরাপশন’ ধারা ২.৪.২, ২.৪.৩, ২.৪.৪, ২.৪.৫ ও ২.৪.৬ কার্যকর হবে। এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ছয় মাস আর সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে আইসিসি।
মন্তব্য করুন