জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০১৯ উগলক্ষে গতকাল রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে দেশের সব নাগরিককে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দায়িত্ব শুধু সরকারে নয়, গিাড়িচালকেরও নয়। পথচারী থেকে শুরু করে সকল নাগরিকের দয়িত্ব এটি। সবাই এক্ষেত্রে যার যার দায়িত্বপালন করবেন।
তিনি বলেন, যারা পথচারী তাদের নিজেদের দায়িত্ব আছে, যারা গাড়িতে চলেন ও যারা গাড়ি চালান তাগেদরও দায়িত্ব আছে। সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন। দেশটা আমাদের, একটা মানুষের ক্ষতি হলে কোন না কোন পরিবারের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে সেটাও চিন্তা করতে হয়।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী চালকদের একটানা ৫ ঘন্টার বেশি সময় গাড়ি না চালানো, দূরপাল্লার যানবাহনে বিকল্প ড্রাইভারের ব্যবস্থা রাখা এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রন করা ও চালকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন প্রদান করা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহার না করাসহ অনেক নির্দেশনা দেন।
চালক-পথচারী সবাইকে সচেতন ও নিয়ম মানার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, সড়ক নিরাপদ করতে গেলে সবচেয়ে বেশি যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে সবাইকে সচেতন হওয়া ও নিয়ম মেনে চলা। আমাদের দেশে একটা প্রবণতা আছে, সেটা হলো কোন একটা দুর্ঘটনা চালককে গালি দেওয়া হয়। হ্যা, আমাদের চালকদের ও দোষ আছে এতে কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু আমি শুধু চালকদের দেষারোপ করবো না। আমাদের যারা পথচারী এ দূর্ঘটনা ঘটানোর জন্য তারাও কিন্তু অনেকটা দায়ী। দেখা যায়, কেউ কোনো নিয়মকানুন মানেন না।
সড়ক আইন বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, সচেতনতাও সৃষ্টি করা হয় না। এটাও আরেকটা সমস্যা। এজন্য বার বার বলেছি, স্কুল-কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা যেসব প্রতিষ্ঠানে অনেক লোক কাজ করে, তাদের মাঝেও এ সচেতনতা সৃষ্টি করা একান্তভাবে প্রয়োজন। চালকদের যথাযথ বিশ্রাম, সময়মতো খাবার নিশ্চিত ও স্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রাখা এবং হেলপারের হাতে গাড়ি চালাতে না দেয়ার আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী।
রাস্তা পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার ও নিয়ম মানার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে শুধু হাত দেখিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে অনেকে। কিন্তু গাড়ি তো একটা যন্ত্র, এটা থামতেও তো সময় লাগে—এই বোধটাও পথচারীদের থাকতে হবে, এ জ্ঞানটা থাকতে হবে। সড়কে কিছু আইন আছে যেটা মেনে চলতে হয়।
সড়কে ওভারটেকিংয়ের অসুস্থ প্রতিযোগিতা ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ড্রাইভারদের দোষ আছে। হাইওয়ে বা কোথাও যখন একটা গাড়ি ওভারটেক করল, তখন তার মাথা খারাপ হয়ে গেল যে ওই গাড়ি ওভারটেক করতে হবে। এই যে একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা, এর জন্যও কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটে।
গাড়ির মূল নকশা পরিবর্তনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্টদের সব সময় বলে আসছি, আবারো বলছি। যেহেতু এখানে মন্ত্রী, সচিব সবাই আছে, তাদের বলব, যে কেউ যদি এ ধরনের নিয়মের বাইরে গাড়ির সাইজ বা ট্রাকের সাইজ কোনো কিছু বাড়ায় তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের ট্রাফিক পুলিশকেও এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। এ সময় যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধে কঠোর হওয়া ও জরিমানা আদায় এবং ফুটপাত দখলমুক্ত রাখার নির্দেশও দেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্তব্য করুন