গবাদি পশু বেচা-কেনার অন্যতম বড় হাট হচ্ছে ঢাকার গাবতলী পশুর হাট। অধিকাংশ মাংসের সরবরাহ এ ঐতিহ্যবাহী হাট থেকেই হয়ে থাকে। তবে সম্প্রতি নানা প্রতিবন্ধকতা পার করছে এ হাটের ব্যবসায়ী ও হাট ইজারাদার পক্ষ। বেশ কিছুদিন ধরে ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ থাকায় এর প্রভাব পড়েছে দেশি গরুর বাজারে। ভারতের সঙ্গে সরাসরি ব্যবসা বন্ধ থাকায় দেশি গরুর দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজধানীতে মাংসের যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে তার বড় একটি অংশ পূরণ করছে দেশের বাইরে থেকে আমদানিকৃত মাংস। অভিযোগ রয়েছে, দেশি গরুর মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে আমদানিকৃত মাংস বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। যার কারণে গাবতলী পশুর হাটসহ রাজধানীর আশপাশের হাটগুলোতে পশু বেচা-কেনা কমেছে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের বাইরে থেকে আমদানিকৃত মাংসের দাম অনেক কম। এসব আমদানিকৃত মাংস হোটেল ব্যবসায়ী এবং কাঁচা মাংসের বাজারে বিক্রি হচ্ছে। মাংস আমদানির ফলে গরুসহ অন্যান্য গবাদি পশুর ব্যবসা ও খামারিদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে। বর্তমানে মাত্র ৩০ থেকে ৪০টি গরু বিক্রি হয় দিনে। মহিষ বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০টির মতো। যা অতীতের চেয়ে কয়েক গুণ কম।
রবিবার গাবতলী পশু হাট পরিদর্শনে দেখা যায়, হাটের বিভিন্ন স্থানে গরু, মহিষ, ছাগল বেঁধে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের কর্মচারীরা এসব পশুর পরিচর্যা করছেন। হাটে কোনো ক্রেতা নেই। এদিন সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মাত্র একটি গরু বিক্রি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
গাবতলী হাটের হাসিল ঘরের ক্যাশিয়ার মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, আগে যেসব কসাই ও হোটেল ব্যবসায়ীরা এখান থেকে গরু নিতেন, তারা এখন আর গরু নিচ্ছেন না। নিলেও খুব কম। দেশি গরুর মাংসের চেয়ে আমদানিকৃত মাংসের দাম কম হওয়ায় তারা আমদানিকৃত মাংসই কিনছেন।
গাবতলী হাট পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, এখন গাবতলী হাটের অবস্থা ভালো না। আগের থেকে গরু বেচা-কেনাও কম। বর্তমানে বিদেশ থেকে প্যাকেটজাত মাংস আসছে। মানুষ সেগুলোই খাচ্ছেন। ফলে আমাদের গরুর চাহিদা কমে গেছে। সারা দিনে ৩০ থেকে ৪০টা গরু বিক্রি হয়। মহিষ বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০টা।
তিনি মনে করেন, বাইরে থেকে মাংস আমদানি বন্ধ হলে দেশের গরুর চাহিদা বাড়বে। আবার গাবতলী হাটও আগের মতো জমজমাট হবে।
আনন্দবাজার/ইউএসএস
মন্তব্য করুন