মসলিন, রেশম, জামদানি, শতরঞ্জি- এসব বাংলাদেশের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্য আর ইতিহাস আমরা হারাতে বসেছি। নানা কারণে আমাদের সুপ্রাচীন এই ঐতিহ্যগুলো নিয়ে আমরা এগুতে চাই না। অথচ বাংলাদেশের এই প্রাচীন সম্পদগুলো যে কত মূল্যবান তা হিসেব কষে বোঝানো যাবে না। তারপর নানা জটিলতায় আমরা এসব নিয়ে মাথা ঘামাই না। সরকারের নীতি নির্ধারক মহলেও এ নিয়ে তেমন ব্যস্ততা নেই।
দৈনিক আনন্দবাজারে প্রকাশিত ‘রেশম শিল্পের সুদিন ফিরছে’ সংবাদটি নিঃসন্দেহে আশার আলো জাগানোর মতো। রাজশাহীর রেশম কারখানা ২০০২ সাল থেকে কেন বন্ধ ছিল, আবার ২০১৮ সালে চালু হয়। খবরে জানা যায়, একনেক ১৫৩ কোটি টাকার ৪টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে৷ এই প্রকল্প অনুমোদন পেলেই শেষ কথা নয়।
প্রকল্পগুলো সচল এবং কার্যকরী রাখতে যা যা করা প্রয়োজন তা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে করতে হবে। শুধু তাই নয়, এই অর্থ যেন অবচয় বা অহেতুক যেনতেনভাবে অপব্যয়, অপব্যবহার না হয় সে বিষয়টিতে নজর দেয়া অত্যন্ত জরুরি। যারা এই বিষয়ের দায়িত্বে রয়েছেন তাদের কঠিনভাবে খেয়াল ও নজরদারি রাখতে হবে বিষয়টিতে। যাতে প্রকল্পগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়। সরকারের সদিচ্ছা যেন বাস্তবায়ন হয়। টাকা অবচয় বা নষ্টের কারণে এই রেশম শিল্প যেন আবার ২০০২ সালের মতো মুখ থুবড়ে না পড়ে।
বর্তমান সরকার বিশেষ করে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং প্রাচীন সম্পদগুলোকে পুনরুদ্ধারে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন এবং রাখতে বদ্ধ পরিকর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই উৎসাহ, এই আগ্রহ যেন আমাদের কারও অপকর্মের কারণে ধূলিস্যাৎ হয়ে না যায়। সে বিষয়টি এই রেশম শিল্পের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কঠিন দায়িত্বের সঙ্গে পালন করতে হবে। বিশেষ করে রাজশাহী অঞ্চলের রেশম শিল্পের ওপরে ভর করে যারা জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন তাদের এ বিষয়ে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
আমরা বিশ্বাস করি বর্তমান সরকার যেভাবে আমাদের ঐতিহ্য ও ঐতিহাসিক সম্পদ রক্ষা এবং গৌরব গাঁথাকে লালনে এগিয়ে এসেছে আমাদের সংশ্লিষ্টরাও সে বিষয়ে যথাযথভাবে মনোযোগী হবেন। রেশম, মসলিন, জামদানি, শতরঞ্জীসহ আমাদের দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের লালিত এসব পণ্য আবার প্রাণ ফিরে পাবে, মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
মন্তব্য করুন