নতুন সড়ক আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনের দাবিতে দেশের আটটি জেলায় চলছে পরিবহন ধর্মঘট। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার যাত্রীরা। তবে ধর্মঘট বিক্ষিপ্তভাবে হচ্ছে এবং এর সঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির নেতারা।
খুলনা: সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে খুলনা থেকে অভ্যন্তরীণ ও বিভিন্ন আন্তঃজেলা রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের প্রতিবাদে তারা বাস চালাচ্ছেন না। অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন তারা।
যশোর: সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে যশোরে গতকাল ছিল ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন। জেলা থেকে দেশের ১৮টি রুটে বন্ধ রয়েছে বাস চলাচল।
কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের বাস চলাচল গতকাল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শ্রমিকরা বলছেন, নতুন আইনে বিভিন্ন জরিমানা ও শাস্তির পরিমাণ অনেক বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটা তাদের জীবন-জীবিকার ওপর বাড়তি চাপ। আইন সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন তারা।
চুয়াডাঙ্গা: গতকাল সকাল ১০টা থেকে বন্ধ হয়ে যায় স্বল্প ও দূরপাল্লার বাস চলাচল। তবে এই ধমর্ঘট পরিবহন শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।
ঝিনাইদহ: গতকাল সকাল থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। চালকদের দাবি, নতুন সড়ক আইনে চালকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দুর্ঘটনা তো দুর্ঘটনাই। কেউ তো ইচ্ছা করে দুর্ঘটনা ঘটায় না। জরিমানা যদি পাঁচ লাখ টাকা হয়, তাহলে চালকরা আর গাড়ি চালাবেন না।
সাতক্ষীরা: সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে সাতক্ষীরায়ও। এদিন জেলার বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও আন্তঃজেলা রুটে পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে ধর্মঘটের কোনো কর্মসূচি দিইনি। আমরা শ্রমিকদের বলেছিলাম ২১ তারিখ পর্যন্ত এ ধরনের কোনো কর্মসূচিতে যাব না। ২১ ও ২২ নভেম্বর সারা দেশের পরিবহন শ্রমিক সংগঠনকে নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভা থেকেই পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণের ঘোষণা আমরা দিয়েছিলাম। কিন্তু অনেক জেলায় পরিবহন শ্রমিকরা আমাদের সেই নির্দেশনা না মেনে অতি উৎসাহী হয়ে ধর্মঘট শুরু করেছেন।
বিআরটিএর পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) একেএম মাসুদুর রহমান বলেন, গতকাল থেকে নতুন সড়ক আইন নিয়ে বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছেন। তবে প্রথমদিকে তারা কোনো কঠোর শাস্তি বা বেশি জরিমানা আদায়ের দিকে যাচ্ছেন না। গতকাল কাউকে কোনো ধরনের কারাদণ্ডও দেয়া হয়নি। ধীরে ধীরে আইনটি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে।
আনন্দবাজার/ইউএসএস
মন্তব্য করুন